মানিকছড়ি(খাগড়াছড়ি)প্রতিনিধিঃ- খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে দলে প্রাণচাঞ্চল্য হলেও একই সময়ে আওয়ামী স্বেছাসেবক লীগের আহুত শোক সভাকে ঘিরে জনপদে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বিএনপিকে স্বল্প পরিসরে সম্মেলন করার শর্ত দিয়েছে ।
অন্যদিকে বিএনপির গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ দলীয় কার্যালয়ে শোক সভা করবে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। দু’দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসুচীতে জনমনে রয়েছে শংকা! উপজেলা বিএনপি’র দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের পর বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে দলের তৃণমূলে নেতাকর্মীরা প্রাণচাঞ্চল্যে উৎফুল্ল। সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক এনাম। সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোট প্রার্থী ২২জন। এসব পদের মধ্যে কেবল সাধারণ সম্পাদকে প্রার্থি ৪ জনকে নিয়ে জল্পনা কল্পনার কমতি নেই দলে। কে হচ্ছেন কাংখিত সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে চলছে চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ।
এদিকে দীর্ঘ এক দশক উপজেলায় দলের আধিপত্য বিস্তারে কোন ঠাঁসা বিএনপি এই সম্মেলনকে ঘিরে সতেজ হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠন মাঠ দখলে কঠোর অবস্থানে! আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ একই সময়ে ডেকেছে শোক সভা। বিএনপি সম্মেলন স্বস্তঃস্ফূর্ত ও আনন্দময় করতে উপজেলা অডিটরিয়াম প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠানের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও পুলিশ সেটিকে বাতিল করে দলীয় কার্যালয়ে স্বল্প পরিসরে ও শর্ত সাপেক্ষে সম্মেলনের অনুমতি দিয়েছে। শর্তের মধ্যে রয়েছে দলীয় কার্যালয়ের বাহিরে প্যান্ডেল না করা। ৩০০ লোকের বেশি জমায়েত না করা, সন্ধ্যার আগেই কর্মসূচী শেষ করা, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌম বিরোধী বক্তব্য না দেওয়া। ফলে এসব শর্ত মেনে বিএনপিকে সম্মেলন করতে হচ্ছে! এ প্রসঙ্গে বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি মো. এনামুল হক এনাম বলেন, বিএনপির মতো একটি দল এত স্বল্প পরিসরে সম্মেলন করা মোটেও সম্ভব না। পার্বত্যবাসীর অহংকার, সাবেক সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সফল চেয়ারম্যান ওয়াদুদ ভূঁইয়া যেখানে প্রধান অতিথি,সে অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার নেতাকর্মী জমায়েত হবে। তবুও আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সহনশীল পরিবেশে সম্মেলন করবো।
এদিকে একই সময়ে উপজেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে শোক সমাবেশ আহব্বান করেছে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ! এতে করে উপজেলায় রাজনৈতিক মাঠে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ এ বিষয়ে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আ’লীগের নেতৃবৃন্দকে তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে শোক সভা করার অনুরোধ করেছে। এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন বলেন, শোকের মাস এলেই বিএনপি ও তাঁদের দোসরেরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা অপতৎপরতায় মেতে উঠে। ১৯৯৬-২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির খাগড়াছড়ি সাবেক সাংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়া জনপদে আওয়ামী পরিবার ও সাধারণ মানুষের উপর যে জুলুম নির্যাতন ও বর্বরতা চালিয়েছে তা এখানকার মানুষ ভূলার নয়! তাই তাকে এখানে আসতে দেওয়া হবে না। যে কোন মূল্যে তা প্রতিরোধ করতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কঠোর অবস্থানে থাকবে আ’লীগের সকল নেতাকর্মীরা। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলম বলেন, একই সময়ে বিএনপি’র সম্মেলন ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শোক সভা হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপিকে বেশ কিছু শর্ত দিয়ে স্বল্প পরিসরে সম্মেলন করতে বলা হয়েছে। আর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে শোক সভা না করে দলীয় কার্যালয়ে করতে অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করি উভয়ে শর্ত মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচী পালন করবে। পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে থাকবে।